ডিমলায় বাদাম বিক্রিতে চলে শিশু লামের পরিবার
বাসুদেব রায়, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর ডিমলা বাদাম বিক্রি করে চলে শিশু লামের পরিবার। তখন বাজে বিকেল ৫টা ঠিক এমন সময়ে বাতাসের সাথে ভেসে আসছে শিশু লামের হাক-ডাক, ‘বাদাম লাগবে ভাই বাদাম, নেন না ভাই বাদাম’। তবে সবাই যেন শুনেও শুনছেন না তার কথা। এভাবেই হাক ডাক দিয়েই দিন শেষ হয় ১০ বছর বয়সী শিশু সন্তান লামের। এক দুই কথায় শিশু লাম তার সংগ্রামী জীবনের গল্প বর্ণনা করে। লাম বলে তার বাবাও একজন বাদাম বিক্রিতা। মা নেই তিন ভাই ও বাবা সহ তার বসবাস।
লাম ডিমলা উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের নাউতারা গ্রামের সহিদার রহমানের ছেলে। নাউতারা এম.ই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্র। কিছুটা বুঝতে শেখার পর সংসারে দুঃখ লাঘব করার জন্য সে স্কুল ব্যাগ ছেড়ে হাতে তুলে নিয়েছে বাদামের গামলা। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের কারণে উড়ন্ত বয়সে দুরন্তের সময় শিশু লামের হাত বাদাম বিক্রেতা। প্রতিদিন ভোরে ২-৩ কেজি বাদাম বাড়ি থেকে ভেজে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার বাবা সহ সেটা বেচে যা লাভ হয় তা দিয়ে মাছ জোটে না, কোনো মতে তরকারি আর চাল কিনে বাসায় ফিরতে হয়।
চোখ মুছতে মুছতে লাম বলে ‘আমি প্রায় রাতে খাইনে, আমি খাইলে ছোট ভাইয়ে খাওয়া হয় না। তাই মাঝে মাঝে যে অল্পদুটো ভাত থাকে তাই সকালে পান্তা ভাত আর ঝাল পিঁয়াজ দিয়ে খাইয়ে বাদাম নিয়ে বেরোই পড়ি।
কান্না জড়িত কন্ঠে লামের বাবা সহিদার রহমান বলেন, লামের বয়স যখন ৭ মাস ঠিক তখনই তার মা লাইজু আক্তার মৃত্যুবরণ করেন। অনেক কষ্টে লামের বাদাম বেচা টাকা দিয়েই এক আধবেলা খেয়ে না খেয়ে আমাদের সংসার চলছে। সে ডালিয়া তিস্তা ব্রীজ এলাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করে।
উপজেলা নাউতারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হইলাম। ‘আমি খুব তারাতারি লামের পরিবারের পাশে দাড়াবো ইনশাল্লাহ।
দৈনিক আলোর প্রতিদিন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না