ফুলবাড়ীতে “দপ্তরি কাম প্রহরী”-দের ছাড়াই অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকদের বিদায়ী সংবর্ধনা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ-
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলাধীন নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ মতিয়ার রহমান (বালাতাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়), জনাব মোঃ তৈয়ব আলী (পশ্চিম বালাতাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) এবং সহকারী শিক্ষক জনাব মোঃ শফিকুল ইসলাম (পশ্চিম বালাতাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়), জনাব মোঃ আব্দুল ফাত্তাহ (পূর্ব কুরুষা ফেরুষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) মোট ৪ জন চলতি বছরে অবসরে যান ।উক্ত শিক্ষকগণের অবসর জনিত বিদায় উপলক্ষে আজ (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় উক্ত ইউনিয়নের চর গোড়ক মন্ডপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক ঝমকালো “সংবর্ধনা ও শ্রদ্ধাঞ্জলী” অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । এ অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রায় ১৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭০ জন শিক্ষক এবং পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ১৬ জন প্রধান শিক্ষক । নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফকির পাড়া ক্লাস্টার প্রধান ও সহকারি প্রাথমিক উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব মোঃ আশরাফুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক আলহাজ্ব খবির উদ্দিন, চর গোড়ক মন্ডপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জনাব মোঃ শাহজামাল ইসলাম এবং চর গোড়ক মন্ডপ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জনাব মোঃ আয়াজ উদ্দিন সহ আরও অনেকে ।
কিন্তু বড় দুঃখ্যের বিষয় হলো প্রায় শতাধিক শিক্ষক ও অতীথিবৃন্দের এ অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি উক্ত ইউনিয়নের “দপ্তরি কাম প্রহরী”-এর (০৮) জন কর্মচারীকে । শিক্ষিত সমাজ ও সচেতন মানুষের নিকট তাদের প্রশ্ন আমরা কি তাদের সমাজের বাইরের মানুষ, না তাদের সহযোগী মাত্র ?
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক তাদের একজন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “পাঁচশত টাকা করে চাঁদার মাধ্যমে প্রতিজন শিক্ষক উক্ত অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেছেন । আমাদের প্রধান শিক্ষক হয়তো ভেবেছেন সেখানে আমরা অশিক্ষক , অপ্রয়োজনীয় এবং তাঁদের সমাজের বাইরের মানুষ তাই আমাদের ডাকার প্রয়োজন মনে করেনি ।”
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আরও একজন বলেন, “এ ধরনের অবহেলা মানা খুব কষ্ট ও বেদনাদায়ক । আমরা এখানে বৈশ্যম্যের স্বীকার হয়েছি ।”
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান পরিচালক ও নাওডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ শাহাজাদা খন্দকার (কবি) বলেন, এ ইউনিয়নের ৮ টি বিদ্যালয়ে “দপ্তরি কাম প্রহরী” রয়েছে । উক্ত আটটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিয়ন্ত্রণাধীণ তাঁরা । প্রধান শিক্ষকগণ তাঁদের ম্যানেজ করতে পারেননি । তাই তারা অংশগ্রহণ করেননি ।কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে আমরা তাদের খাবারের প্যাকেট পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করি ।
ফকির পাড়া ক্লাস্টার প্রধান ও সহকারি প্রাথমিক উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব মোঃ আশরাফুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো ।
দৈনিক আলোর প্রতিদিন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না