রাঙ্গাবালীতে দুর্যোগ মোকাবিলায় সাহসী ভূমিকা ও আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার মানবিক সহায়তা
আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার মানবিক সহায়তা
নিজস্ব প্রতিনিধি
রাঙ্গাবালী,পটুয়াখালী।
পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা, যেখানে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে, যাতে উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত হয়। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির (গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী) উপজেলা কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছেন। তার সৎ ও নিষ্ঠাবান নেতৃত্বে রাঙ্গাবালী উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিচালিত হয়েছে, যা উপজেলাবাসীর জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।
উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই তিনি সৎ, নিষ্ঠাবান ও একাগ্রতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে আনসার ও ভিডিপির কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে, যা সরাসরি রাঙ্গাবালীর মানুষের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, সামাজিক উন্নয়ন, এবং সেবামূলক কার্যক্রমে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনে অবদান আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের জীবনমান উন্নত করতে সহায়ক হয়েছে। তিনি সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান নিশ্চিত করছেন। তার নেতৃত্ব ও উপজেলা প্রশিক্ষকদের সহযোগিতায় নারী সদস্যরাও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, যা নারীর ক্ষমতায়নকে ত্বরান্বিত করেছে। তার প্রচেষ্টায় রাঙ্গাবালীতে একটি সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত আনসার ও ভিডিপি সংগঠন গঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখানে সাধারণ ঘটনা। ২০২৪ সালে ঘূর্ণিঝড় রিমেল উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানলে রাঙ্গাবালী উপজেলা সরাসরি এর প্রভাব অনুভব করে। এই পরিস্থিতিতে মোঃ জাকির হোসেনের নেতৃত্বে আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান। ঘূর্ণিঝড়ের সময়, তিনি এবং তার দল অন্তত উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৮৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে নিরাপদে স্থানান্তর করেন এবং তাদের খাদ্য, পানি, ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেন। তার তৎপরতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে সক্ষম হয় এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তা পান। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও আনসার ভিডিপি সংগঠনের সহযোগিতায় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ জন ভিডিপি সদস্যের মধ্যে নগদ অর্থ, খাদ্য সামগ্রী, এবং ঢেউটিন বিতরণ করেন।
দুর্যোগ মোকাবেলা ছাড়াও, তিনি দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন প্রকল্পেও অবদান রেখেছেন। তার নেতৃত্বে রাঙ্গাবালীর বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক সচেতনতা ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। তিনি আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্যানিটেশন এবং নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করেছেন।
উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে জানা যায় যে, মোঃ জাকির হোসেন ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৯২ খ্রি. তারিখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগদান করেন এবং সেই থেকে অদ্যাবধি নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি অত্যন্ত পরিশ্রমী, অভিজ্ঞ এবং বিচক্ষণ এক কর্মকর্তা, মানবিক ও জনদরদী মনোভাবের জন্য বাহিনীতে সুপরিচিত। বর্তমান পদে চাকরির সময়কালে, গত ১০ বছরে তাকে পাহাড়ি অঞ্চল ও সমুদ্রসংলগ্ন দুর্গম এলাকায় মোট ৭ বার বদলি করা হয়েছে। জনদরদী ও প্রবীণ এই কর্মকর্তা কর্মজীবনে চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। বৈষম্যমূলক বদলির শিকার হলেও, রাঙ্গাবালীতে তার নেতৃত্বে উন্নয়ন পরিকল্পনা অব্যাহত রয়েছে। তার লক্ষ্য হলো প্রতিটি আনসার ও ভিডিপি সদস্যকে উন্নত সেবা প্রদানের পাশাপাশি তাদের জীবনমান উন্নত করা। তিনি নারীদের ক্ষমতায়নে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান এবং তাদের আরও সম্পৃক্ত করার জন্য পরিকল্পিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে, উপজেলার আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের জন্য ভূমি বরাদ্দ ব্যবস্থা এবং বহুতল ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে আনসার ও ভিডিপি ক্লাব গঠন করা হচ্ছে, এবং ব্লু ইকোনোমি খাতে সদস্যদের ব্যাপক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও, স্থানীয় জনগণকে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য সিপিপি সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে তারা দুর্যোগের সময় নিজেদের রক্ষা করতে এবং স্থানীয়ভাবে সহায়তা প্রদান করতে সক্ষম হয়।
তার নেতৃত্বে রাঙ্গাবালীতে সেবামূলক ও উন্নয়নমূলক কাজ এবং ঘূর্ণিঝড় রিমেল মোকাবিলায় অবদান প্রশংসনীয়। তার সৎ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা এবং বিশেষ অবদান রাঙ্গাবালীতে একটি সুসংগঠিত ও উন্নত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়েছে। ভবিষ্যতে তার এই প্রচেষ্টা আরও সমৃদ্ধ ফলাফল বয়ে আনবে বলে আশা করা যায়, যা রাঙ্গাবালীর মানুষের জীবনকে আরও উন্নত ও সুরক্ষিত করবে।
দৈনিক আলোর প্রতিদিন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
পাঠকের মন্তব্য: