অনিয়ম-দুর্নীতি আর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা।
নতুন সংযোগ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি
রাঙ্গাবালী পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় অনিয়ম-দুর্নীতি আর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা। বিদ্যুৎ এর নতুন সংযোগ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এজিএম এর বিরুদ্ধে । টাকা না দিলে মিলেনা বিদ্যুৎ সংযোগ । ব্যাহত হচ্ছে সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ। ফলে ভোগান্তিতে চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ।
চারদিকে সাগর আর নদী মাঝখানে দ্বীপটির নাম রাঙ্গাবালী । সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে দেশের সর্বদক্ষিণের দ্বীপ উপজেলায়।
রাঙ্গাবালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভৌতিক বিল, বিদ্যুৎ সংযোগের নামে অর্থ আদায়,নতুন মিটারের আবেদনের টাকা নিয়ে একের পর এক তারিখ পরিবর্তন গ্রাহকদের হয়রানি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অস্থায়ী নিয়োগ দেয়া কর্মচারীরা। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের গ্রাহকদের সামান্য বকেয়া বিলের জন্য বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করা, নতুন মিটারের আবেদন করলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অতিরিক্ত ঘুষ দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রকল্পকে পুঁজি করে একটি দালাল চক্র বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণে আগ্রহীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ওই চক্রের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের এজিএমএর যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে প্রতি মাসে বিলের কাগজ না দিয়ে ৩ থেকে ৪ মাস পরে কাগজ দিয়ে লাইন কেটে দেয়ারর হুমকি দিয়ে আদায় করা হচ্ছে টাকা । টাকা না দিলে লাইন কেটে নানা কৌশলে আদায় করা হয় অতিরিক্ত টাকা। ফলে পল্লি বিদ্যুৎ ব্যবহারে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে হাজারো গ্রাহককে।
বাহেরচর ভুক্তভোগী কুলসুম বলেন, বিদুৎ বিলের কাগজ না নিয়ে এসে আমার কাছে টাকা চায় আমি টাকা দেই নাই। তিন মাসে আর খবর নাই হঠাৎ একদিন এসে ৯০০ টাকা বিল চায়। আমি বলি, বিকেলে গিয়ে অফিসে টাকা জমা দিয়ে আসব। আমার কথা না শুনে সাথে সাথে লাইন কেটে দেয়। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ এত টাকা এক সাথে পাব কোথায়।
গ্রাহকদের টাকা হাতে হাতে নিয়ে সে টাকা অফিসে জমা না দিয়ে আবার কয়েকমাস পরে নতুন করে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে ।
গ্রাহক এনি বলেন, মিটারের কাগজ দেয় নাহ কয়েক মাস ধরে। হঠাৎ একদিন এসে টাকা চাইছে আমার কাছে টাকা দিয়ে দিছি। পরবর্তী আরেক জন এসে লাইন কাটার হুমকি দেয় পরবর্তীতে আমি রাগাই জাই।পরে আমাকে অফিসে দেখা করতে বলে, আমি অফিসে গিয়ে দেখি কোন টাকাই জমা দেয় নি। তারপরে চিল্লা ফাল্লা শুরু করলে আমার তিন মাসের টাকা যোগ করে। এভাবে প্রতিনিয়ত আমারা হয়রানির স্বীকার হই।
আরেক গ্রাহক কল্পনা বিবি বলেন, ৩ মাসের মিটার বিলের কাগজ দেয় নাহ। আমি বেড়াতে গেছি এসে দেখি লাইন কেটে দিছে। আমার লাইন পুনরায় লাগাতে ৭০০ টাকা খরচ দিতে হইছে। এর জন্য দ্বায়ী কি আমরা। এজিএম স্যারের কাছে গেলে সে অভিযোগ না শুনে বলে দোষ আপনাদের। আপনারা জানান নাই কেন। প্রতি মাসে মাসে তারা অন্যায়করবে আর তার মাশুল গুনতে হয় আমাদের।
এটা একটা টাকা নেওয়ার ফাঁদ।
পল্লী বিদ্যুৎ এজিএম তৌফিক ওমরের সাথে সাক্ষাৎ করলে, টাকা নেয়ারর কথা অস্বীকার করেন। ভৌতিক বিল,মিটারের লাইন কাটা,ঠিকমত মাঠে না যাও বিষয়ে জানতে চাইলে কোন রকম দ্বায় সাড়া কথা বলেন। তবে কারা টাকা নিচ্ছে তাদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন এজিএম ।
দৈনিক আলোর প্রতিদিন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
পাঠকের মন্তব্য: