ঝিনাইদহের এর হাটগোপালপুরে শামীমের অবৈধ পলিথিনের অভয় অরণ্য ব্যবসা চলছে প্রশাসনের নাকের ডগায়
জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ ঃ
বাংলাদেশ পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ২০০২ইং সালের ৮ ই জুলাই পরিবেশ অধিদপ্তর এর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে।
কিন্তু নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানায় ব্যবহার ঝিনাইদহের ১১ নং পদ্মাকর ইউনিয়নের হাটগোপালপুর বাজার।
প্রকাশ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ হাটগোপালপুর বাজারে অবৈধ কারখানা পরিচালিত হয়ে আসছে।
সরেজমিনে হাটগোপালপুর বাজারে শামীম হোসেন বাসা পুটিয়া তিনি হাট গোপালপুর সোনালী ব্যাংকের পাশে একটি রুমে অবৈধভাবে গড়ে তুলেছেন এ রমরমা পলিথিন ব্যবসা। সাংবাদিকরা কারখানায় উপস্থিত হয়ে দেখতে পাই কারখানায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন।
সাংবাদিকরা কারখানার ভেতরে ভিডিও ধারণ করতে গেলে তারা জানান, আমাদের সরকার বৈধতা দিয়েছে হাটগোপালপুর বাজারে প্রায় পাঁচ থেকে ছয়টি পলিথিন কারখানা রয়েছে মাঝে মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন আসেন ও বিভিন্ন প্রশাসনের লোকজন আসেন,তারা তো কোনো সমস্যা করে না। আপনারা আমাদের কাগজপত্র দেখুন সবকিছুরই অনুমতি আছে। জানা যায় এই কারখানায় বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালিত হয়েছে কিন্তু কারখানা মালিক শামীম হোসেন দাবি করে বলেন,আমি বিভিন্ন সাংবাদিকের টাকা দিয়ে এবং আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র/লাইসেন্স আছে।কিন্তু আমরা চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি, এবং সেখানে পরিবেশ অধিদপ্তরের যে নিয়ম নীতিমালা তার কোন বলাই নেই। এবং তিনি একজন সাংবাদিকের ফোন করে আমাদের ফোনে কথা বলায় দেন তিনি এখান থেকে মাসে মাসোয়ার নেন বলে মালিক আমাদের জানান। এবং তিনি কারখানাটির জানলা দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যান এবং ভিতরে যাতে কেউ ঢুকতে না পারে সেজন্য চারিদিকে টিনের শেড দিয়ে আটকে রেখেছেন যাতে বাইরে থেকে কেউ বুঝতে না পারে এখানে অবৈধ পলিথিন তৈরি হয় । এবং উপর মহলে ওনার হাত আছে বলে হুমকি প্রদান করে, এবং সাংবাদিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে বলেন যা করতে পারেন তাই আপনারা করেন।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এ সকল পলিথিন কারখানা চলছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা,মস্তান, প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তা, কথিত সাংবাদিকদের পৃষ্ঠপোষকতায়,যার কারণে বছরের পর বছর নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানায় পলিথিন উৎপাদন হলেও প্রশাসন সম্পূর্ণ নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছেন বরাবরই অদৃশ্য কারণে!
পদ্মাকর ইউনিয়নে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সাংবাদিকদের জানান,অবৈধ নিষিদ্ধ এই সকল পলিথিন কারখানা যারা চালাচ্ছেন তারা সবাই প্রভাবশালী,তাদের সাথে স্থানীয় কথিত সাংবাদিক, মস্তান ও রাজনৈতিক নেতাদের যোগসূত্র রয়েছে।
হাটগোপালপুর বাজারের ফার্নিচার ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান জিয়া সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই হাটগোপালপুর বাজার ও আশেপাশে বেশ কয়েকটি অবৈধ পলিথিন কারখানা দেদার্সে চলছে,মাঝে মধ্যেই দেখি প্রশাসনের লোকজন এসে এদেরকে জরিমানা করেন অনেক সময় ধরেও নিয়ে যান কিন্তু কিছু পরেই আবারো তারা পলিথিন উৎপাদন করেন, কারখানা রমরমা ভাবে চলে।
হাটগোপালপুর বাজারের আরেক জন ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের জানান, মাঝে মধ্যেই দেখি বিভিন্ন সাংবাদিক ও প্রশাসনের
লোকজন এসে এদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যান,এদের হাত অনেক লম্বা কেউই এদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না। আমরা জানি পলিথিন পোড়ালে কার্বন মনো–অক্সাইড উৎপন্ন হয়ে বাতাস দূষিত করে। পলিথিনের জন্য সমুদ্র,নদী,পুকুর, খাল বিলের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। যেখানে সেখানে পড়ে আছে পলিথিনের পরিত্যক্ত অংশ। ময়লা–আবর্জনা ফেলার জন্যও পলিথিন ব্যবহার করা হয়। মাটিতে এটি আটকে পানি ও প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান চলাচলে বাধা দেয়। মাটিতে থাকা অণুজীবগুলোর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে না, জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পায় এবং শস্যের ফলন কম হয়।বর্তমানে ভারত, চীন ছাড়াও পৃথিবীর অন্যান্য দেশে বায়োডিগ্রেবল পলিথিন প্রস্তুত করা হচ্ছে। আফ্রিকা, উগান্ডা, ইউরোপ,অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, উত্তর আমেরিকাসহ প্রায় শতাধিক দেশে রাসায়নিক পলিথিনকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে এবং তারা পচনশীল এই বায়োডিগ্রেবল পলিথিন উৎপাদন করছে। মানুষকে সচেতন ও কঠোর নির্দেশনার ফলে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাটের ব্যাগ ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে আইন প্রয়োগের অভাবে পলিথিন উৎপাদন এখনো হচ্ছে।
ঝিনাইদহের স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগণ জানান,নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধে বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং আইন অমান্যকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ বা ঠোঙা—এসবের ব্যবহার সহজলভ্য ও সচেতনতা বাড়াতে হবে। দেশে কোনোভাবেই যেন নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদিত না হয় সেদিকে সরকারকে কঠোর হতে হবে। পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করতে সারা দেশে ক্যাম্পেইন, মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ করা যেতে পারে।
ঝিনাইদহের হাটগোপালপুর বাজারে ও আবাসিক এলাকার মধ্যে কিভাবে ঝিনাইদহের পরিবেশ অধিদপ্তর এদেরকে ছাড়পত্র দিল,কিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন কারখানা চলছে রমরমা, সেই বিষয়ে ঝিনাইদহের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালকের সাথে কথা বলতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেন নাই।এবং কিভাবে তারা দিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরে ছাড়পত্র,তাহলে ওখানে চলে কি টাকার বাণিজ্য।
ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্থানীয় জনগণ দাবি করে বলেন অনতিবিলম্বে হাটগোপালপুরের এই সকল অবৈধ পলিথিন কারখানা সহ ঝিনাইদহের সকল নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানা সিলগালা করে অবৈধ পলিথিন কারখানার মালিকদের জেল-জরিমানা করা হোক।
পরিবেশ ক্ষতির সম্মুখীন হলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে, তাই নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ করা হোক এটাই সাধারণ মানুষের দাবি।
দৈনিক আলোর প্রতিদিন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
সর্বশেষ
Selected poll is not defined.
বার্তা সম্পাদক : রাইতুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয় : ১৬১/১/এ উলন, রামপুরা, ঢাকা-১২১৯
মোবাইল : 01715674001
বিজ্ঞাপন : 01727338602
ইমেইল : alorprotidin@gmail.com, news.alorprotidin@gmail.com,
Developed by RL IT BD
পাঠকের মন্তব্য: