সড়ক দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার উপায়..
নিরাপদ সড়ক চাই
নিজেস্ব প্রতিনিধি,
রাঙ্গাবালী,পটুয়াখালী।
প্রতিদিন কতো দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে আমাদের সৃষ্ট স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে, সড়ক দুর্ঘটনা তারমধ্যে অন্যতম একটি জাতীয় সমস্যা বলা যায়। আজকাল শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় পায়ে হেঁটে বা যানবাহনে চলাফেরা বিপজ্জনক। এদেশে সড়ক পথের যথেষ্ট উন্নতি হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় চোখ বুলালে বা টিভি অন করলেই সড়ক দুর্ঘটনার মর্মান্তিক খবর ভেসে ওঠে।বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার পৃথিবীর যে কোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। উন্নত বিশ্বের তুলনায় আমাদের দেশের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি। আমাদের দেশের সড়ক দুর্ঘটনার জন্য এককভাবে কেউ দায়ী নয়।নানাবিধ কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে, যেমন–চালকদের অসাবধানতা,অদক্ষতা ও লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক,ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, রাস্তার স্বল্পতা ও অপ্রশস্ততা, প্রতিযোগিতামূলকভাবে গাড়ি চালানো… প্রভৃতি কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার যেসব চিত্র পাওয়া যায় তা সত্যিই ভয়াবহ এবং খুবই দুঃখজনক।প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় মুহূর্তের মধ্যেই ছিনিয়ে নিচ্ছে অমূল্য জীবন, ভেঙ্গে দিচ্ছে অসংখ্য সুখের সাজানো সংসার। স্বজন হারা মানুষের আহাজারি, পিতৃহারা সন্তানের আর সন্তানহারা মায়ের বুকফাটা ক্রন্দন.. ইত্যাদি দেখলে মনটা বেদনায় ভরে যায়। বিভিন্নভাবে সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। কোথাও বাসের সঙ্গে বাসে,কোথাও বাসে -ট্রাকে,কোথাও টেম্পো -বাসে ঘটে এসব দুর্ঘটনা। আবার কোথাও দেখা যায় -রিক্সা বা নিরীহ পথচারীকে চাপা দেয় দ্রুতগামী গাড়ি নামধারী ঘাতক বাস বা ট্রাক।আবার অনেক সময় ফেরিতে উঠতে গিয়ে বা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, রাস্তার পাশের গাছে খেয়ে অথবা প্রতিযোগিতামূলকভাবে কোনো গাড়ীকে ওভারটেক করতে গিয়েও সংঘটিত এসব দুর্ঘটনা অকালেই কেড়ে নিচ্ছে অমূল্য মানবজীবন।
তাই আজ গণবিবেক জেগে ওঠেছে। আমাদের আজ ভাবতে হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিকারের ব্যবস্থা নিয়ে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিকারের জন্য দ্রুত যথাযথ যেসব ব্যবস্থাগুলো নেওয়া গেলে এ দুর্ঘটনা কিছুটা হলেও কমবে।
যেমনঃ- (১) সাবধানে গাড়ি চালানোর জন্য চালকগণকে উদ্বুদ্ধ করা। (২) অনির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং বন্ধ করা। (৩) লাইসেন্স প্রদানের পূর্বে চালকের দক্ষতা ও যোগ্যতা যাচাই -বাছাই করা লাইসেন্সবিহীন কেউ যেনো গাড়ি চালাতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা। (৪) গাড়ি রাস্তায় বের করার আগে এর যান্ত্রিক কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারলে দুর্ঘটনা কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে। (৫) সড়ক দুর্ঘটনার শাস্তি অর্থাৎ সিআর পিসির ৩০৪ বি ধারা পরিবর্তন করে সাজার পরিমাণ ৭ বছর থেকে ৩ বছর করা হয়েছে। এ শাস্তির মেয়াদ আরো বাড়ানো দরকার। (৬) রাস্তায় পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। (৭) হাইওয়েতে যে কোনো মানুষ বা প্রাণী চালিত বাহন চলাচল বন্ধ করে তাদের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি করা দরকার। (৮)ফুটপাত হকারদের দখলমুক্ত করে পথচারীদের চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থার আরো আধুনিকায়ন ও উন্নয়ন ঘটানো দরকার। কিন্তু পথচারীদেরও ট্রাফিকের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। (৯) গাড়ির প্রতিটি চালক এবং আমাদের/সবার মনে রাখতে হবে সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। তাই সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি প্রয়োজনে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে অতিরিক্ত মাল ও যাত্রী বহন বন্ধ করা।, আবার বলছি, সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। প্রতিটি জীব বা প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করতেই হবে;তাই আমাদেরও মরতে হবে। কিন্তু পথের বলি হয়ে আমরা কেউ মরতে চাই না। তাই সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি যতোই জটিল সমস্যা হোক না কেন,সরকারের পাশাপাশি সকলের সামগ্রিক চেষ্টা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে এসব দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়!! অতএব, “নিরাপদ সড়ক চাই “-এ স্লোগান নিয়ে সবাইকে আরো এগিয়ে আসতে হবে।
দৈনিক আলোর প্রতিদিন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
পাঠকের মন্তব্য: