রবিবার ২ এপ্রিল, ২০২৩

For Advertisement

মধুখালীতে জমজমাট ‘কামলার হাট’

৩০ আগস্ট, ২০২২ ১২:৫১:০৭

মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ঃ ফরিদপুরের মধুখালীতে গড়ে উঠেছে শ্রম বিক্রির বিশাল হাট। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন শত শত দরিদ্র মানুষ এখানে আসে শ্রম বিক্রি করতে।
বেলা বারতেই মধুখালী বাজার বাসষ্ট্যান্ড ওয়ালটন শো-রুমের সামনে চোখে পড়ে মানুষের জটলা। সকাল থেকেই মানুষগুলো জড়ো হতে শুরু করে। আরেক শ্রেণির মানুষ এখানে আসে শ্রম কিনতে। প্রায় ৭/৮ বছর ধরে মধুখালীতে এই শ্রমিকের হাট গড়ে উঠেছে। এসব শ্রমিকরা পাট কাটা, ধোয়া থেকে শুরু করে খেত-খামার এবং গৃহস্থালির বিভিন্ন কাজ করে থাকে।
সপ্তাহের শুক্র ও সোমবারের দুই হাটে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন থেকে লোকজন শ্রম কিনতে আসে। হাটে ওঠা পণ্যের মত এখানেও চলে দরদাম। এসব শ্রমিকের শ্রমের মূল্য ৩৫০-৫৫০ টাকা পর্যন্ত।
সকাল হলেই চলতে থাকে দরদাম, দাম ওঠানামা করে যাকে বলা হয় বদলি। কেউ বলে কামলা। আবার অনেকে বলেন শ্রমিক। সপ্তাহের শুক্র ও সোমবারের হাটে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে এই বদলির বাজার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মূলত ফরিদপুর, যশোর, সাতক্ষীরা, শেরপুর, পাবনা, রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, রাজবাড়ি সহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন এখানে আসেন কাজের খোঁজে। এক বেলার জন্য বা কয়েকদিনের জন্য তারা বিক্রি হয় এই বাজারে।
সোমবার শ্রমিকের হাটে কথা হয় চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা মামা ও ভাগিনা মোঃ মুসা এবং ইসরাফিলের সাথে তারা জানান, তাদের নিজ জেলায় এ মৌসুমে তেমন কাজ নেই। পারিবারিক সমস্যায় পরে পরিবারে সদস্যের নিয়ে এখানে এসেছেন। ভাড়া বাড়িতে থেকে এ মৌসুমে কাজ করে কিছু টাকা গুছিয়ে নিজ দেশে ফিরে যাবো। এ অঞ্চলে শ্রমের দাম বেশী, কাজও বেশী। তাছাড়া প্রতিদিন শ্রম বিক্রি করা যায়। তাই এখানে চলে আসি।
শেরপুরের কামরুজ্জামান (৪২) জানান, মহাজনেরা আমাদেরকে মানুষ হিসেবেই গণ্য করে না। কাজে একটুও বিশ্রাম দিতে চায় না।
সাতক্ষীরা থেকে আসা খোকন বলেন ৫/৭ বছর এলাকাতে কাজে আসি। এবার ৩৩ দিন হয়েছে এসেছি। রাতে রেলস্টেশনে ঘুমাই দিনে কাজে চলে যায়। কাজের মৌসুম শেষ করে আবার এলাকাতে চলে যায়।
বাজার বাসস্টান্ডের ওয়ালটন এক্সক্লুসিভ শো-রুমের সত্ত্বাধিকারী মোঃ রেজাউল করিম বলেন, আমার শো-রুম চালু করারও পূর্বে বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে এসে কামলার হাট বসে। সামনের স্থানটা পাকা করে দেওয়ায় তারা এখানে সুন্দর ভাবে শ্রমবিক্রি করতে পারেন।
মধুখালী উপজেলাতে শ্রমিক আন্দোলন নিয়ে কাজ করা ওয়াকার্স পার্টির নেতা আবু সাঈদ মিয়া বলেন শ্রম বিক্রি করতে শ্রমিকদের নিরাপত্তাহীনতাসহ নানা রকম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। রাতের বেলায় যাত্রী ছাউনি, ট্রাফিক অফিসের বারান্দা, বিভিন্ন মার্কেটের বারান্দায় রাত্রি যাপন করে। আবার কেউ খোলা আকাশের নিচেই রাত কাটান। কাজ না পেলে কেও খবর নেই না, খেয়ে না খেয়ে জীবন কাটে। কাজ এবং খাদ্য সংকটে ভোগে তারা। যদি তাদের স্ব স্ব এলাকাতে কাজের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে তাদের জন্য শুভকর হবে।

দৈনিক আলোর প্রতিদিন’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।


পাঠকের মন্তব্য:

সর্বশেষ

For Advertisement

সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ রাসেল ইসলাম
বার্তা সম্পাদক : রাইতুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয় : ১৬১/১/এ উলন, রামপুরা, ঢাকা-১২১৯
মোবাইল : 01715674001
বিজ্ঞাপন : 01727338602
ইমেইল : [email protected]il.com, [email protected]

Developed by RL IT BD